ফটোকপি, কোথা থেকে এলো, হুমকি, অমন কথা সবাই বলে,চেঞ্জ, ভবিষ্যৎ

ফটোকপি

ফটোকপি করার পর তা মূল কাগজের সঙ্গে মিলিয়ে দেখছিলেন ভদ্রলোক।
– এত মনোযোগ দিয়ে কী দেখছেন?
– দেখছি ফটোকপিতে কোনো ভুল আছে কি-না!

 কোথা থেকে এলো

স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী তার পুরনো প্রেমিকের সঙ্গে রয়েছে ঘরে। হঠাৎ স্বামী এসে উপস্থিত। প্রেমিক বেচারা উপায়ন্তর না দেখে আলমারির পেছনে লুকালো। ঘরের মেঝেতে তার চুরুট দেখে স্বামী তো রেগে আগুন। স্ত্রীর কাঁধে ঝাঁকুনি দিয়ে বলল, বলো, এ চুরুট আমার ঘরে কী করে এলো?

কোনো জবাব না পেয়ে স্বামী আরও ক্ষেপে গিয়ে বলল, তোমাকে বলতেই হবে এ চুরুট কোথা থেকে এলো?
প্রেমিক আর সহ্য করতে না পেরে আলমারির পেছন থেকেই বলল, ও তো মেয়ে মানুষ। ও কী করে জানবে যে এ চুরুট কোত্থেকে এলো। আপনি পুরুষ হয়েও চিনতে পারছেন না এ চুরুট হাভানার!

 হুমকি
– হ্যালো, ইন্সপেক্টর সাব। ফোন করে আমাকে এক ব্যক্তি বারবার হুমকি দিচ্ছে।
– কে হুমকি দিচ্ছে? কি বলছে ?
– টেলিফোন অফিস থেকে হুমকি দিচ্ছে। বলছে ১৫ তারিখের মধ্যে টাকা না দিলে ফোনের লাইন কেটে দেবে।

অমন কথা সবাই বলে

বস তার নতুন সেক্রেটারিকে বললেন, আমি এখন জরুরি মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকব। কোনো ফোন এলে পরে করতে বলবেন।
সেক্রেটারি : যদি জরুরী কাজের কথা বলে ? শুনতে না চায় ?
বস : বলবেন অমন কথা সবাই বলে।
একটু পরেই এল ফোন। সেক্রেটারী কিছুতেই ফোন দেবে না। ওপাশের বক্তব্য, আমি তার স্ত্রী বলছি।
সেক্রেটারী বলল, অমন কথা সবাই বলে।

চেঞ্জ

ডাক্তার : আপনার শরীরে কোনো রোগ নেই। আসলে আপনার দরকার চেঞ্জের।
রোগি : গত দুবছর আমি দুই স্বামী, তিনটে বাড়ি, চারটে চাকর, পাঁচটা রাঁধুনি পরিবর্তন করেছি। কত আর চেঞ্জ করব?

ভবিষ্যৎ

বন্ধু : কী দোস্ত, প্রকাশকের সঙ্গে এতক্ষণ কী নিয়ে ফিসফাস করলি?
লেখক :এই তো, আমার নতুন ভুতের গল্প বইটার ভূত-ভবিষ্যৎ নিয়ে একটু আলোচনা করলাম।
বন্ধু : তা তিনি কী বললেন?
লেখক :বললেন, আমার বইয়ে ভূত আছে সত্য, তবে ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি সন্দিহান!

জেল থেকে বের করা

এক কয়েদি দুদিন পরপর অসুস্থ হয়ে জেল ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। পরীক্ষা করে ডাক্তার জানাল, একটি কিডনি তার কেটে ফেলে দিতে হবে। এ কথা শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল কয়েদি।

ডাক্তার! আমি প্রথমবার যখন আপনার কাছে আসি, আপনি টনসিল কেটে নিলেন। দ্বিতীয়বার গলব্লাডার। তৃতীয়বার কাটলেন অ্যাপেন্ডিস! আমি আপনার কাছে আসি এই আশা নিয়ে যে, অসুস্থ বলে আপনি আমাকে জেল থেকে বের হতে সাহায্য করবেন। আর আপনি কি-না উল্টো কিডনি কেটে ফেলার কথা বলছেন!
হ্যাঁ, বলছি। আরে এত রেগে যাচ্ছেন কেন? একবারে কি সব হয়? আমি তো একটু একটু করে আপনাকে জেল থেকে বের করে নিচ্ছি!

শুরুর না করতেই আউট

এক সুন্দরী মহিলা গেছে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে: ছার, আমার ইজ্জত লুইট্যা লইসে এক বজ্জাত, লম্পট ক্রিকেটার।
পুলিশ জিগায়: কেমনে বুঝলেন ক্রিকেটার?
মহিলা: ওই লুকের হাতে গলাভস, মাথায় হেলমেট আর পায়ে প্যাড আছিলো। আর আমার মুনে হ্য় বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান আশরাফিল আছিলো।
পুলিশ জিগায়: কেমনে বুঝলেন ওইডা আশরাফিল?
মহিলা: আরে বেশীক্ষণ টিকে নাই তো। শুরুর লগেই আউট

ডিজিটাল আব্বা

> আজ আমি আপনাদের সাথে এক টা ডিজিটাল গপ্পো শেয়ার করুম।রেডী হইয়া লন।গপ্পো টা

> যারা

> পরে নাই তাদের জন্য।

>

> …………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

>

> ডিজিটাল আব্বা – আনিসুল হক

>

> ডিপার্টমেন্টের হেডস্যার বললেন, 'নেক্সট সেমিস্টারে তোমার আর কন্টিনিউ করার

> দরকার

> নাই। তুমি অন্য কোথাও দেখো।'

>

> আমি বললাম, 'স্যার, আর কোথায় দেখব! এত ভালো একটা ইউনিভার্সিটি আমি ছাড়ব না।

> আর

> আপনার মতো টিচার! আমাকে লাস্ট চান্স দেন, স্যার।'

>

> 'গতবার আমি তোমাকে লাস্ট চান্স দিয়েছি। লাস্ট চান্স কয়বার হয়?' স্যারের

> মুখে মৃদু

> হাসি।

>

> 'এবিসি স্যার (মানে আবুল বাশার চৌধুরী) তো স্যার, আমাকে তিনবার লাস্ট চান্স

> দিয়েছেন।'

>

> হেডস্যার হাসলেন, 'তুমি টার্ম ফি দাও নাই। অ্যাবসেন্ট ছিলা প্রায় সব দিন।

> ফাইন দিয়ে

> এডমিশন নেওয়ার ডেটও পার হয়ে গেছে।'

>

> 'ব্যাক ডেটে নেন, স্যার।'

>

> 'তুমি এক কাজ করো। তোমার আব্বাকে ডেকে আনো। উনি এসে যদি বন্ড দেন, তাহলেই

> তোমাকে

> আমরা পরের সেমিস্টারে অ্যালাউ করব। যাও।' স্যারের হাসি মিলিয়ে গেল। তাঁর

> মুখটা কঠিন

> মনে হচ্ছে। আমি ঘামছি। অথচ স্যারের রুমে এয়ারকন্ডিশনার। মাথার ওপরে ফ্যানও

> ঘুরছে।

>

> আব্বা আসলে নিয়মিত টাকা দিয়েছেন। টার্ম ফি, সেশন ফি। আমি সেসব ভার্সিটিতে

> জমা

> দিইনি। এখন আব্বাকে কীভাবে বলব, আপনাকে স্যারের সঙ্গে দেখা করতে হবে। এটা

> অসম্ভব।

> এর আগে আব্বা আমার কাছে টাকা জমা দেওয়ার রসিদ চেয়েছেন। সেটা বানিয়েছি। রসিদ

> বানানো

> খুব সোজা। কম্পিউটারে বানিয়ে লাল-হলুদ কাগজে প্রিন্ট নিলেই হলো। পরীক্ষার

> প্রগ্রেসিভ রিপোর্ট চেয়েছেন। সেটাও বানিয়ে নিয়ে গেছি। আব্বা জানে আমার ফিফথ

> সেমিস্টার চলছে। আসলে আমার অবস্থা খুবই খারাপ। থার্ড সেমিস্টার পার হতে

> পারছি না।

>

> আচ্ছা, এত কিছু যখন নকল করতে পেরেছি, একটা আব্বাও নকল করতে পারব। আমাদের

> বন্ধুদের

> মধ্যে আছে মোস্তফা কামাল, তাকে দেখতে লাগে বাবা-বাবা। সে একটা গ্রুপ

> থিয়েটারে নাটক

> করার চেষ্টা করছে। কাজেই সে পেশাদার অভিনেতা। আপাতত আমার আব্বার চরিত্রে

> তাকে অভিনয়

> করতে হবে।

>

> কামালকে নিয়ে গেলাম স্যারের কাছে। 'স্যার, আব্বা এসেছেন, স্যার।'

>

> 'আপনার ছেলে যে ক্লাস করে না আপনি জানেন?' স্যার বললেন।

>

> মোস্তফা কামাল বিব্রত হওয়ার ভঙ্গি করে বলল, 'হারামজাদা! তুমি বাপের নাম

> ডুবাবা।

> ক্লাস করো না, রোজ বাইর হও সাইজা-গুইজা, কই যাও?'

>

> আমি বলি, 'আব্বা, গালি দিচ্ছেন কেন? এটা আমার ভার্সিটি, উনি আমাদের

> হেডস্যার।

> ভদ্রতা বজায় রাখেন।'

>

> 'হারামজাদা, তোকে আজ মাইরাই ফেলব। তুমি ক্লাস করো না!' মোস্তফা পায়ের

> স্যান্ডেল

> তুলছে। (হারামজাদা, এইটা ওভারঅ্যাক্টিং হইতেছে। তুই খালি বাইরা, তোরে আজকা

> খাইছি।)

>

> স্যার ভীষণ বিব্রত। বললেন, 'না, না। আপনি শান্ত হোন। আপনার ছেলে তো টার্ম

> ফিও দেয়

> না!'

>

> 'টার্ম ফি দেয় না! হারামজাদা পড়াশোনা করে না, এইটার মানে বুঝলাম। কিন্তু

> টাকা তো

> আমি অরে নিয়মিত দেই। টার্ম ফি দেস নাই ক্যান, ওই …'

>

> আমি কাঁচুমাচু হয়ে বলি, 'খরচ আছে না!'

>

> মোস্তফা আমার কান ধরে বসে। (হারামজাদা বাইরে আয়। তোর কান যদি আমি টেনে

> লম্বা না

> করছি!)

>

> এই সময় স্যারের কাছে ফোন আসে। স্যার ধরেন, 'হ্যালো। জি, জামান সাহেব, একটু

> ব্যস্ত।

> আপনার প্রিয় ছাত্রকে নিয়েই বসেছি। আসবেন? আসেন।'

>

> জামান সাহেব আসছেন। স্যার ফোন রেখে মোস্তফার দিকে তাকিয়ে বলেন, 'আপনার

> সঙ্গে নাকি

> জামান সাহেবের পরিচয় আছে। আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্যই আসছেন।'

>

> আমি প্রমাদ গুনি। মোস্তফার সঙ্গে জামান স্যারের পরিচয় আছে, নাকি আব্বার

> সাথে! দুটোই

> সমান বিপদ ডেকে আনবে।

>

> 'স্যার, আমরা আসি। আব্বার কাজ আছে। আব্বা, তোমার না কাজ?'

>

> মোস্তফাটা একটা গাধা। বলে, 'না তো, কাজ আবার কী। তোরটা এস্পার-ওস্পার না

> কইরা

> ছাড়তেছি না। প্রফেসর সাব, আমার ছেলেরে আপনার হাতে তুইলা দিলাম, আপনি

> মারেন-কাটেন,

> খালি নামটা কাইটেন না।'

>

> ততক্ষণে জামান স্যার এসে হাজির। 'কই, হাশেম সাহেব কই?'

>

> 'এই যে হাশেম সাহেব।'

>

> জামান স্যার বলেন, 'উনি তো হাশেম সাহেব নন!'

>

> আমি বলি, 'স্যার। ইনিই হাশেম সাহেব। আমার আব্বা।'

>

> জামান স্যার বলেন, 'তোমার আব্বাকে আমি খুব ভালো করে চিনি। তার সঙ্গে আমি

> একসঙ্গে

> মালয়েশিয়া গিয়েছিলাম।'

>

> আমি বলি, 'স্যার, আমার আব্বাকে আপনি কী করে চিনবেন! হাশেম সাহেব নামে তো কত

> লোকই

> আছে ঢাকায়। আর তার ছেলের নাম হাসনাত হতেই পারে।'

>

> 'কিন্তু তোমার আব্বা সঙ্গে যে মুভি ক্যামেরাটা নিয়ে গিয়েছিলেন, সেখানে

> তোমাদের

> পারিবারিক ভিডিও অনেক দেখেছি। হাসনাহেনা তোমার বোন তো? তার সঙ্গে আমার

> ছেলের বিয়ের

> কথাও অনেক দূর এগিয়েছে।' (ইস, আমি ফ্যামিলির খবর কিছুই কেন রাখি নাই!)

>

> মোস্তফা উঠে পড়েছে। সে কি পালাতে চায়!

>

> আমি ছাড়ার পাত্র না। খড়কুটো আটকে ধরার মতো করে বলি, 'না, হাসনাহেনা বলে

> আমার কোনো

> বোন নাই। আপনি, স্যার, ভুল করছেন।'

>

> স্যার বলেন, 'হাশেম সাহেব, আপনার স্ত্রীর নামটা বলুন তো। আমাদের ফরমে ছেলের

> পিতা-মাতা

> দুটো নামই লিখতে হয়। আমার সামনে কম্পিউটারের পর্দায় ওর বাবা-মা সব নামই

> আছে। নিজের

> স্ত্রীর নাম বলতে পারেন না?'

>

> আমি বলি, 'গুলশানারা। আব্বা বলো। আব্বাদের আমলে স্বামীর নাম, স্ত্রীর নাম

> মুখে আনতে

> মানা ছিল।'

>

> মোস্তফা কামাল ধপাস করে পড়ে যায়। চোখ থেকে তার চশমা ছিটকে পড়ে। এই

> হারামজাদার

> আরেকটা সমস্যা আছে। সে চশমা ছাড়া দেখতে পায় না।

>

> আমি দিলাম এক দৌড়। থাক হারামজাদা, অভিনয় পারিস না, স্ক্রিপ্ট মুখস্থ নাই,

> তোর ঠেলা

> তুই সামলা!

>

> এবার আরেকজনকে আব্বা বানাতে হবে। তার আগে জামান স্যারকে সরাতে হবে অকুস্থল

> থেকে।

> আমার বোন হাসনাহেনাই সেটা পারবে। আমি বলি, 'আপুসোনা, একটা কাজ করে দাও না।

> তোমার

> হবু শ্বশুর জামান স্যারকে একটু এনগেজড রাখো।'

>

> ব্যবস্থা পাকা। জামান স্যার এখন গেছেন ইউনাইটেড হাসপাতালে পুরো শরীর চেকআপ

> করাতে।

> হাসনাহেনা দাঁড়িয়ে থেকে নিজে থেকে তাঁকে সবগুলো টেস্ট করাচ্ছে।

>

> এবার আমাদের বন্ধুর মামা নাট্যশিল্পী মশিউল আলম গেছেন আমার আব্বা সেজে।

> মশিউল বললেন,

> “জামান সাহেবের কাছে আমি সব শুনেছি। আমার মাথা কাটা যাচ্ছে। গুলশানারাও তো

> লজ্জায়

> মুখ দেখাতে পারছে না। বলছে, 'তোমার কী ছেলে পেটে ধরেছি।' এই হাসনাত, আর

> কোনো দিন এই

> রকম করবি?”

>

> আমি বললাম, 'না আব্বা। আরও? যা শিক্ষা হবার হয়ে গেছে।'

>

> 'মনে থাকে যেন …'

>

> বলার সঙ্গে সঙ্গে আমার অরিজিনাল আব্বা হাশেম সাহেব ও আমার অরিজিনাল আম্মা

> গুলশানারা

> পাশের ঘর থেকে এসে উঁকি দিলেন। স্যার নিজেই ফোন করে তাদের আগে থেকে ডেকে

> এনে পাশের

> রুমে বসিয়ে রেখেছিলেন। আজকালকার টিচারগুলান এই রকম ফাজিল প্রকৃতির হয়ে

> থাকে! বলেন,

> এই দেশ কীভাবে ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করবে, যদি শিক্ষক ও অভিভাবকেরা ছাত্রদের

> সহযোগিতা না করে?

>

> মশিউল টের পায়নি, বলেই চলেছে, 'ওর মা তো সারা দিনরাত কাঁদছে। নকল আব্বা

> বানিয়েছে

> ছেলে …।'

>

> কান্নার শব্দ উঠল। আমি তাকিয়ে দেখলাম আমার সত্যিকারের আম্মার চোখে

> সত্যিকারের জল।

>

> {গল্প টি প্রথম আলোর ঈদ সংখ্যা (ঈদ-উল-ফিতর 2009) থেকে সংগৃহীত}

>

> ভাল লাগলে কমেন্টাইয়েন।

ডিজিটাল আব্বা

> আজ আমি আপনাদের সাথে এক টা ডিজিটাল গপ্পো শেয়ার করুম।রেডী হইয়া লন।গপ্পো টা

> যারা

> পরে নাই তাদের জন্য।

>

> …………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

>

> ডিজিটাল আব্বা – আনিসুল হক

>

> ডিপার্টমেন্টের হেডস্যার বললেন, 'নেক্সট সেমিস্টারে তোমার আর কন্টিনিউ করার

> দরকার

> নাই। তুমি অন্য কোথাও দেখো।'

>

> আমি বললাম, 'স্যার, আর কোথায় দেখব! এত ভালো একটা ইউনিভার্সিটি আমি ছাড়ব না।

> আর

> আপনার মতো টিচার! আমাকে লাস্ট চান্স দেন, স্যার।'

>

> 'গতবার আমি তোমাকে লাস্ট চান্স দিয়েছি। লাস্ট চান্স কয়বার হয়?' স্যারের

> মুখে মৃদু

> হাসি।

>

> 'এবিসি স্যার (মানে আবুল বাশার চৌধুরী) তো স্যার, আমাকে তিনবার লাস্ট চান্স

> দিয়েছেন।'

>

> হেডস্যার হাসলেন, 'তুমি টার্ম ফি দাও নাই। অ্যাবসেন্ট ছিলা প্রায় সব দিন।

> ফাইন দিয়ে

> এডমিশন নেওয়ার ডেটও পার হয়ে গেছে।'

>

> 'ব্যাক ডেটে নেন, স্যার।'

>

> 'তুমি এক কাজ করো। তোমার আব্বাকে ডেকে আনো। উনি এসে যদি বন্ড দেন, তাহলেই

> তোমাকে

> আমরা পরের সেমিস্টারে অ্যালাউ করব। যাও।' স্যারের হাসি মিলিয়ে গেল। তাঁর

> মুখটা কঠিন

> মনে হচ্ছে। আমি ঘামছি। অথচ স্যারের রুমে এয়ারকন্ডিশনার। মাথার ওপরে ফ্যানও

> ঘুরছে।

>

> আব্বা আসলে নিয়মিত টাকা দিয়েছেন। টার্ম ফি, সেশন ফি। আমি সেসব ভার্সিটিতে

> জমা

> দিইনি। এখন আব্বাকে কীভাবে বলব, আপনাকে স্যারের সঙ্গে দেখা করতে হবে। এটা

> অসম্ভব।

> এর আগে আব্বা আমার কাছে টাকা জমা দেওয়ার রসিদ চেয়েছেন। সেটা বানিয়েছি। রসিদ

> বানানো

> খুব সোজা। কম্পিউটারে বানিয়ে লাল-হলুদ কাগজে প্রিন্ট নিলেই হলো। পরীক্ষার

> প্রগ্রেসিভ রিপোর্ট চেয়েছেন। সেটাও বানিয়ে নিয়ে গেছি। আব্বা জানে আমার ফিফথ

> সেমিস্টার চলছে। আসলে আমার অবস্থা খুবই খারাপ। থার্ড সেমিস্টার পার হতে

> পারছি না।

>

> আচ্ছা, এত কিছু যখন নকল করতে পেরেছি, একটা আব্বাও নকল করতে পারব। আমাদের

> বন্ধুদের

> মধ্যে আছে মোস্তফা কামাল, তাকে দেখতে লাগে বাবা-বাবা। সে একটা গ্রুপ

> থিয়েটারে নাটক

> করার চেষ্টা করছে। কাজেই সে পেশাদার অভিনেতা। আপাতত আমার আব্বার চরিত্রে

> তাকে অভিনয়

> করতে হবে।

>

> কামালকে নিয়ে গেলাম স্যারের কাছে। 'স্যার, আব্বা এসেছেন, স্যার।'

>

> 'আপনার ছেলে যে ক্লাস করে না আপনি জানেন?' স্যার বললেন।

>

> মোস্তফা কামাল বিব্রত হওয়ার ভঙ্গি করে বলল, 'হারামজাদা! তুমি বাপের নাম

> ডুবাবা।

> ক্লাস করো না, রোজ বাইর হও সাইজা-গুইজা, কই যাও?'

>

> আমি বলি, 'আব্বা, গালি দিচ্ছেন কেন? এটা আমার ভার্সিটি, উনি আমাদের

> হেডস্যার।

> ভদ্রতা বজায় রাখেন।'

>

> 'হারামজাদা, তোকে আজ মাইরাই ফেলব। তুমি ক্লাস করো না!' মোস্তফা পায়ের

> স্যান্ডেল

> তুলছে। (হারামজাদা, এইটা ওভারঅ্যাক্টিং হইতেছে। তুই খালি বাইরা, তোরে আজকা

> খাইছি।)

>

> স্যার ভীষণ বিব্রত। বললেন, 'না, না। আপনি শান্ত হোন। আপনার ছেলে তো টার্ম

> ফিও দেয়

> না!'

>

> 'টার্ম ফি দেয় না! হারামজাদা পড়াশোনা করে না, এইটার মানে বুঝলাম। কিন্তু

> টাকা তো

> আমি অরে নিয়মিত দেই। টার্ম ফি দেস নাই ক্যান, ওই …'

>

> আমি কাঁচুমাচু হয়ে বলি, 'খরচ আছে না!'

>

> মোস্তফা আমার কান ধরে বসে। (হারামজাদা বাইরে আয়। তোর কান যদি আমি টেনে

> লম্বা না

> করছি!)

>

> এই সময় স্যারের কাছে ফোন আসে। স্যার ধরেন, 'হ্যালো। জি, জামান সাহেব, একটু

> ব্যস্ত।

> আপনার প্রিয় ছাত্রকে নিয়েই বসেছি। আসবেন? আসেন।'

>

> জামান সাহেব আসছেন। স্যার ফোন রেখে মোস্তফার দিকে তাকিয়ে বলেন, 'আপনার

> সঙ্গে নাকি

> জামান সাহেবের পরিচয় আছে। আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্যই আসছেন।'

>

> আমি প্রমাদ গুনি। মোস্তফার সঙ্গে জামান স্যারের পরিচয় আছে, নাকি আব্বার

> সাথে! দুটোই

> সমান বিপদ ডেকে আনবে।

>

> 'স্যার, আমরা আসি। আব্বার কাজ আছে। আব্বা, তোমার না কাজ?'

>

> মোস্তফাটা একটা গাধা। বলে, 'না তো, কাজ আবার কী। তোরটা এস্পার-ওস্পার না

> কইরা

> ছাড়তেছি না। প্রফেসর সাব, আমার ছেলেরে আপনার হাতে তুইলা দিলাম, আপনি

> মারেন-কাটেন,

> খালি নামটা কাইটেন না।'

>

> ততক্ষণে জামান স্যার এসে হাজির। 'কই, হাশেম সাহেব কই?'

>

> 'এই যে হাশেম সাহেব।'

>

> জামান স্যার বলেন, 'উনি তো হাশেম সাহেব নন!'

>

> আমি বলি, 'স্যার। ইনিই হাশেম সাহেব। আমার আব্বা।'

>

> জামান স্যার বলেন, 'তোমার আব্বাকে আমি খুব ভালো করে চিনি। তার সঙ্গে আমি

> একসঙ্গে

> মালয়েশিয়া গিয়েছিলাম।'

>

> আমি বলি, 'স্যার, আমার আব্বাকে আপনি কী করে চিনবেন! হাশেম সাহেব নামে তো কত

> লোকই

> আছে ঢাকায়। আর তার ছেলের নাম হাসনাত হতেই পারে।'

>

> 'কিন্তু তোমার আব্বা সঙ্গে যে মুভি ক্যামেরাটা নিয়ে গিয়েছিলেন, সেখানে

> তোমাদের

> পারিবারিক ভিডিও অনেক দেখেছি। হাসনাহেনা তোমার বোন তো? তার সঙ্গে আমার

> ছেলের বিয়ের

> কথাও অনেক দূর এগিয়েছে।' (ইস, আমি ফ্যামিলির খবর কিছুই কেন রাখি নাই!)

>

> মোস্তফা উঠে পড়েছে। সে কি পালাতে চায়!

>

> আমি ছাড়ার পাত্র না। খড়কুটো আটকে ধরার মতো করে বলি, 'না, হাসনাহেনা বলে

> আমার কোনো

> বোন নাই। আপনি, স্যার, ভুল করছেন।'

>

> স্যার বলেন, 'হাশেম সাহেব, আপনার স্ত্রীর নামটা বলুন তো। আমাদের ফরমে ছেলের

> পিতা-মাতা

> দুটো নামই লিখতে হয়। আমার সামনে কম্পিউটারের পর্দায় ওর বাবা-মা সব নামই

> আছে। নিজের

> স্ত্রীর নাম বলতে পারেন না?'

>

> আমি বলি, 'গুলশানারা। আব্বা বলো। আব্বাদের আমলে স্বামীর নাম, স্ত্রীর নাম

> মুখে আনতে

> মানা ছিল।'

>

> মোস্তফা কামাল ধপাস করে পড়ে যায়। চোখ থেকে তার চশমা ছিটকে পড়ে। এই

> হারামজাদার

> আরেকটা সমস্যা আছে। সে চশমা ছাড়া দেখতে পায় না।

>

> আমি দিলাম এক দৌড়। থাক হারামজাদা, অভিনয় পারিস না, স্ক্রিপ্ট মুখস্থ নাই,

> তোর ঠেলা

> তুই সামলা!

>

> এবার আরেকজনকে আব্বা বানাতে হবে। তার আগে জামান স্যারকে সরাতে হবে অকুস্থল

> থেকে।

> আমার বোন হাসনাহেনাই সেটা পারবে। আমি বলি, 'আপুসোনা, একটা কাজ করে দাও না।

> তোমার

> হবু শ্বশুর জামান স্যারকে একটু এনগেজড রাখো।'

>

> ব্যবস্থা পাকা। জামান স্যার এখন গেছেন ইউনাইটেড হাসপাতালে পুরো শরীর চেকআপ

> করাতে।

> হাসনাহেনা দাঁড়িয়ে থেকে নিজে থেকে তাঁকে সবগুলো টেস্ট করাচ্ছে।

>

> এবার আমাদের বন্ধুর মামা নাট্যশিল্পী মশিউল আলম গেছেন আমার আব্বা সেজে।

> মশিউল বললেন,

> “জামান সাহেবের কাছে আমি সব শুনেছি। আমার মাথা কাটা যাচ্ছে। গুলশানারাও তো

> লজ্জায়

> মুখ দেখাতে পারছে না। বলছে, 'তোমার কী ছেলে পেটে ধরেছি।' এই হাসনাত, আর

> কোনো দিন এই

> রকম করবি?”

>

> আমি বললাম, 'না আব্বা। আরও? যা শিক্ষা হবার হয়ে গেছে।'

>

> 'মনে থাকে যেন …'

>

> বলার সঙ্গে সঙ্গে আমার অরিজিনাল আব্বা হাশেম সাহেব ও আমার অরিজিনাল আম্মা

> গুলশানারা

> পাশের ঘর থেকে এসে উঁকি দিলেন। স্যার নিজেই ফোন করে তাদের আগে থেকে ডেকে

> এনে পাশের

> রুমে বসিয়ে রেখেছিলেন। আজকালকার টিচারগুলান এই রকম ফাজিল প্রকৃতির হয়ে

> থাকে! বলেন,

> এই দেশ কীভাবে ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করবে, যদি শিক্ষক ও অভিভাবকেরা ছাত্রদের

> সহযোগিতা না করে?

>

> মশিউল টের পায়নি, বলেই চলেছে, 'ওর মা তো সারা দিনরাত কাঁদছে। নকল আব্বা

> বানিয়েছে

> ছেলে …।'

>

> কান্নার শব্দ উঠল। আমি তাকিয়ে দেখলাম আমার সত্যিকারের আম্মার চোখে

> সত্যিকারের জল।

>

> {গল্প টি প্রথম আলোর ঈদ সংখ্যা (ঈদ-উল-ফিতর 2009) থেকে সংগৃহীত}

>

> ভাল লাগলে কমেন্টাইয়েন।

একজন Terrorist একটি নিস্পাপ কুকুরকে বিভ্যৎসভাবে হত্যা করেছে"

নিউ ইয়র্কের রাস্তায় একটি বাচ্চা মেয়েকে একটি পাগলা কুকুর দোড়াচ্ছে।

মেয়ে আগে……তার পিছেনে কুকুর।

কিছু দূর যাওয়ার পর এক ব্যাক্তি সেই কুকুরকে মেরে ফেলল।

কিছু সময় পর নিউ ইয়র্কের পুলিশ এবং সাংবাদিক আসল।ঐ ব্যাক্তির ছবি তুললো এবং

সাধুবাদ জানাল।

নিউ ইয়র্কের পুলিশ প্রধান বললঃ “জেন্টেলম্যন তোমার নাম কি? কালকের খবরের

পাতায় তোমার নাম আসবে। শিরোনাম হবে 'একজন নিউ ইয়র্কবাসী এক নিস্পাপ মেয়েকে

পাগলা কুকুরের হাত থেকে বাচিয়েছে' “।

ঐ ব্যাক্তিটি উত্তর দিলঃ “আমি তো নিউ ইয়র্কবাসী না। আমি এখানে থাকি না”।

নিউ ইয়র্ক পুলিশ প্রধান বললঃ “তাতে সমস্যা কি শিরোনামে তাহলে আসবে 'একজন

আমেরিকানবাসী এক নিস্পাপ মেয়েকে পাগলা কুকুরের হাত থেকে বাচিয়েছে' “।

ঐ ব্যাক্তিটি আবার উত্তর দিলঃ “আমি আমেরিকানবাসীও না।”

তখন পুলিশ বললঃ “তাহলে আপনি কোন দেশের নাগরিক?”

ঐ ব্যাক্তি উত্তর দিলঃ”আমি সৌদি”

তারপর পরদিন সংবাদপত্রের শিরোনামে হলঃ

“একজন Terrorist একটি নিস্পাপ কুকুরকে বিভ্যৎসভাবে হত্যা করেছে”

একজন Terrorist একটি নিস্পাপ কুকুরকে বিভ্যৎসভাবে হত্যা করেছে"

নিউ ইয়র্কের রাস্তায় একটি বাচ্চা মেয়েকে একটি পাগলা কুকুর দোড়াচ্ছে।

মেয়ে আগে……তার পিছেনে কুকুর।

কিছু দূর যাওয়ার পর এক ব্যাক্তি সেই কুকুরকে মেরে ফেলল।

কিছু সময় পর নিউ ইয়র্কের পুলিশ এবং সাংবাদিক আসল।ঐ ব্যাক্তির ছবি তুললো এবং

সাধুবাদ জানাল।

নিউ ইয়র্কের পুলিশ প্রধান বললঃ “জেন্টেলম্যন তোমার নাম কি? কালকের খবরের

পাতায় তোমার নাম আসবে। শিরোনাম হবে 'একজন নিউ ইয়র্কবাসী এক নিস্পাপ মেয়েকে

পাগলা কুকুরের হাত থেকে বাচিয়েছে' “।

ঐ ব্যাক্তিটি উত্তর দিলঃ “আমি তো নিউ ইয়র্কবাসী না। আমি এখানে থাকি না”।

নিউ ইয়র্ক পুলিশ প্রধান বললঃ “তাতে সমস্যা কি শিরোনামে তাহলে আসবে 'একজন

আমেরিকানবাসী এক নিস্পাপ মেয়েকে পাগলা কুকুরের হাত থেকে বাচিয়েছে' “।

ঐ ব্যাক্তিটি আবার উত্তর দিলঃ “আমি আমেরিকানবাসীও না।”

তখন পুলিশ বললঃ “তাহলে আপনি কোন দেশের নাগরিক?”

ঐ ব্যাক্তি উত্তর দিলঃ”আমি সৌদি”

তারপর পরদিন সংবাদপত্রের শিরোনামে হলঃ

“একজন Terrorist একটি নিস্পাপ কুকুরকে বিভ্যৎসভাবে হত্যা করেছে”

একজন কলগার্ল

ছোট্ট বাবুর ক্লাসে নতুন শিক্ষিকা মিস মিলি এসেছেন। তিনি প্রথমেই সকলের সঙ্গে পরিচিত হবেন। কাজেই বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে বললেন, ‘ছোট্ট সুজি, তোমার বাবা মা কী করেন?’

‘আমার বাবা একজন বিজ্ঞানী, আর মা একজন ডাক্তার।’

মিষ্টি হেসে মিস মিলি বললেন, ‘ছোট্ট টুনি, তোমার বাবা মা কী করেন?’

‘আমার বাবা একজন শিক্ষক, আর মা একজন উকিল।’

‘বাহ! ছোট্ট বাবু, তোমার বাবা মা কী করেন?’

বাবু বলল, ‘আমার বাবা মারা গেছেন, আর মা একজন কলগার্ল।’

মিস মিলি রেগে আগুন হয়ে প্রিন্সিপালের কাছে পাঠালেন বাবুকে। মিনিট পাঁচেক পর ছোট্ট বাবু ফিরে এল।

‘তুমি প্রিন্সিপালকে বলেছ, তুমি আমার সঙ্গে কেমন আচরণ করেছ?’

‘জ্বি মিস।’ বলল বাবু।

‘তিনি কী বললেন?’

‘বললেন, আমাদের সমাজে কোনও কাজই তুচ্ছ নয়। তারপর আমাকে একটা আপেল খেতে দিলেন, আর বাসার ফোন নাম্বার লিখে রাখলেন।